অনেকেই নিয়মিত খেজুর খান। বিশেষ করে রমজানে ইফতারিতে খেজুর রাখতে কেউ ভুল করেন না। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। এবার জেনে নিন খেজুর খেলে যে ১০টি উপকার পাবেন।
খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সবারই কমবেশি জানা রয়েছে। এই ফলের পুষ্টি বিশ্বে সর্বাধিক প্রচলিত খাবারে পরিণত করেছে।
এছাড়া খেজুরে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, শক্তি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ক। খেজুর চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়, কারণ এটি চিনির মতো ক্যালোরি বৃদ্ধি করেনা। খেজুর আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি একটা ফল।(খেজুরের উপকারিতা)
১২ টি খেজুরের উপকারিতার বিশেষ তথ্য
১.খেজুর খাওয়া যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো আবার তেমনই চুল ও ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতেও খেজুরের অনেক গুণ রয়েছে। কারণ খেজুরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, বি ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সালফার, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রন
২.মস্তিষ্ক সচল রাখে: খেজুরের সব থেকে বড় গুণ হল খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে। আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির জোগান দিতে সক্ষম এই খেজুর।
৩.কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে: প্রতিদিনের খাবারে অল্প করে খেজুর রাখুন। এটি আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করবে।
৪.প্রোটিনের উৎস: আপনি যদি সহজে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে চান তবে খেজুর খেতে পারেন। খেজুর প্রোটিনের একটি শক্তিশালী উৎস যা আমাদের ফিট থাকতে সহায়তা করে, এমনকি আমাদের পেশীগুলোকেও শক্তিশালী করে।খেজুরের উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাদের প্রতিদিনের খাবারে খেজুর রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
৫.ভিটামিনের উৎস: খেজুরে আছে ভিটামিন বি ১, বি ২, বি ৩, বি ৫, এ ১ এবং সি। এটি আপনাকে সুস্থ রাখার পাশাপশি আপনার শক্তির মাত্রায়ও একটি লক্ষণীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। কারণ খেজুরে আছে গ্লুকোজ, সুক্রোজ এবং ফ্রুক্টোজের মতো প্রাকৃতিক শর্করা। সুতরাং এটি প্রতিদিনের নাস্তার বিকল্প হিসেবেও রাখতে পারেন।
৬.হাড় মজবুত রাখে: আপনি যদি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে চান তবে নিয়মিত খেজুর খেতে শুরু করুন। এটি হাড় ভালো রাখার ক্ষেত্রে বিস্ময়করভাবে কাজ করে। খেজুরে আছে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা এবং ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের হাড়কে সুস্থ রাখতে এবং অস্টিওপরোসিসের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৭.স্নায়ুতন্ত্রকে ঠিক রাখে: খেজুরে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। বিশেষ করে স্নায়ুতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এই উপাদান।খেজুরের উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন। এতে অল্প সোডিয়ামও থাকে যা আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে ঠিক রাখে।
৮.আয়রনের অভাব দূর করে: খেজুরে থাকা ফ্লোরিন আপনার দাঁতকে সুস্থ রাখতে কাজ করে। পাশাপাশি খেজুরে আয়রন থাকে। তাই যারা আয়রনের অভাবে ভুগছেন তাদের খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
আয়রনের অভাবজনিত কারণে রক্তস্বল্পতা, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা হতে পারে। এসব সমস্যা দূর করে খেজুর। এছাড়াও এটি রক্ত পরিশোধনের ক্ষেত্রেও কাজ করে থাকে।(খেজুরের উপকারিতা)
৯.হজমে সহায়তা করে: আপনি যদি কয়েকটি খেজুর পানিতে ভিজিয়ে সেগুলো প্রতিদিন সকালে খান, তবে তা আপনার হজম ব্যবস্থার দ্রুত উন্নত করবে। এতে আরও আছে উচ্চ ফাইবার। যে কারণে যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটা বেশ কাজের। এনডিটিভি অবলম্বনে
১০.গ্লুকোজের অভাব দূর করে: শরীরে গ্লুকোজের অভাব খেজুর দ্রুত পূরণ করতে সাহায্য করে।
১১.কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে: তুলনামূলকভাবে যেসব খেজুর একটু শক্ত সেই খেজুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকাংশে দূর হয়।
১২.হার্টের সমস্যা দূর করে: বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারি। কেননা খেজুর দুর্বল হার্টকে মজবুত করতে সক্ষম করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর ব্লেন্ড করা জুস খেলে হার্টের সমস্যায় কিছু দিনের মধ্যে উপকার পাবেন। হৃদরোগ কমাতেও খেজুর বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রতিদিন কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত
খেজুরে অত্যাধিক পুষ্টিগুণ আছে। মিষ্টি ফল হলেও ফাইবার সমৃদ্ধ এবং কম ক্যালোরি হওয়ায় খেজুর ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। রমজান মাস খেজুরের কদর অন্যান্য সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ সময় কমবেশি সবাই খেজুর খেয়ে থাকেন।(খেজুরের উপকারিতা)
শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে খেজুর।
একটি খেজুরে পুষ্টির মান থাকে-কার্বস ৪৪ শতাংশ, ডায়েটারি ফাইবার ৬.৪-১১.৫ শতাংশ, প্রোটিন ২.৩-৫.৬ শতাংশ, চর্বি ০.২-০.৫ শতাংশ।
এ ছাড়াও এতে থাকে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, তামা,ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন আছে। জেনে নিন খেজুর খেলে শরীর যেভাবে উপকৃত হয়-
ফাইবারসমৃদ্ধ: প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে খেজুরে। এটি গ্রহণের ফলে অন্ত্রের শোষণ প্রক্রিয়াটি ধীর হয়ে যায়। এ কারণে দীর্ঘসময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকে।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের মধ্যে ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিতে সহায়তা করে। যা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং শেষ পর্যন্ত বিপাকক্রিয়াও উন্নত করে।
আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ: সব ফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ নয়। খেজুরে উপস্থিত আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়তা করে।
বিভিন্ন কারণে আঘাত পাওয়া, ফোলাভাব, অস্বাস্থ্যকর খাবারের খাবার গ্রহণের কারণে ঘটে হওয়া প্রদাহ নাশ করে এ উপাদানটি।
একটি খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। খেজুরের উপকারিতা যা সবার জানা দরকারআর প্রোটিন স্বাস্থ্যের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা সবারই জানা। পেশী তৈরি এবং মেরামত করতে সহায়তা করে প্রোটিন।
ওজন কমাতে সাহায্য করে খেজুর। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি করে না। এই মিষ্টি ফল খেলে আপনার অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতিও আগ্রহ কমবে।
খেজুরের নানা উপকারিতা থাকলেও সকাল বিকাল খেজুর খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত যেকোনো খাবারই বিপদের কারণ হতে পারে। দিনে ৪-৫টি খেজুর খেতে পারে। এতে স্বাস্থ্য উপকারিতা মিলবে।
৪-৫টি বা ১০০ গ্রাম খেজুরেই মিলবে প্রায় ২৭৭ ক্যালরি। প্রচণ্ড মিষ্টি হওয়ার কারণে এ ফল যদি বেশি খেতে থাকেন; তাহলে ওজন কমার বদলে দ্রুত বাড়তেও সময় লাগবে না।
ফলের সালাদ বা ডেজার্টে কাটা খেজুর যোগ করতে পারেন। এক গ্লাস উষ্ণ দুধের সঙ্গেও খেজুরের টুকরো মিশিয়ে খেতে পারেন। টকদই, কাস্টার্ড, চাটনি, কেকে মিশিয়েও খেজুর খেতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ