উপকারিতা এর দিক থেকে অশ্বগন্ধার অনেক সুনাম রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকে হয়ত বা অশ্বগন্ধার উপকারিতা জানার চেষ্টা করছি। কিন্তু যথাযথ ভালো ফলাফল পাচ্ছিনা। আমরা অনেক জায়গা থেকে তথ্য খোঁজার চেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছি, তাই না?

আজকে আপনাদের সামনে হাজির করব কিছু অশ্বগন্ধার উপকারিতা। আপনাদের এই জানার আগ্রহ এর জন্য, আমরা চিন্তা করেছি অশ্বগন্ধার এর বিষয় নিয়ে কিছু লিখব।


আপনি যদি আমাদের এই ওয়েবসাইটে নতুন হয়ে থাকেন। তা হলে আমাদের েএই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি আপনারা অশ্বগন্ধার এর উপকারিতা বিষয় সম্পর্কে ভালো জানতে পারবেন।


অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা আসলে কি?
অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা
অশ্বগন্ধার উপকারিতা




অশ্বগন্ধার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের ধারণা প্রায় নেই বললেই চলে। অশ্বগন্ধার নানা ব্যবহারিক প্রয়োগে সবাই অনেক সুস্থ থাকতে পারে। অশ্বগন্ধার মূলের ভেতর থেকে ঘোড়ার মতো গন্ধ বের হওয়ায় এবং এটি ঘোড়ার মতোই বল সম্পন্ন একটি উপাদান বিধায় আয়ুর্বেদিকরা এর নাম দিয়েছেন হলো অশ্বগন্ধা। চলুন জানা যাক অশ্বগন্ধা কি এবং অশ্বগন্ধার উপকারিতা কি কি।


অশ্বগন্ধা জিনিসটা কি 

অশ্বগন্ধা নামক চিরহরিত গুল্মটি ভারতের উত্তরপ্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব,  গুজরাট এবং রাজস্থানের বিস্তীর্ন অঞ্চলে জন্মায়। এছাড়াও আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ,নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানেও এই গুল্মটি বেশ পরিচিত।অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনেক বেশি। আসুন জেনে নিই অশ্বগন্ধা কিভাবে খেতে হবে।

অশ্বগন্ধা এক প্রকার হার্বস। আয়ুর্বেদিক ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অশ্বগন্ধা একটি অন্যতম উপাদান। অশ্বগন্ধার বৈজ্ঞানিক নাম হলো উইদেনিয়া সমনিফেরা। এটির আর একটি নাম আছে তা হলো জিনসেং। এই জিনসেং হলো একটা চায়না হার্বস যা আমাদের গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। এই জিনসেং সম্পূর্ণ বলকারক এবং  পুরুষালী শক্তি বৃদ্ধি কারক একটা হার্বস। 

যৌবনে যবনিকা পড়ার আগে অশ্বগন্ধার সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন


অনিদ্রা থেকে বার্ধক্যজনিত সমস্যা,বাতের ব্যথা। এ সবের নিরাময়ে অশ্বগন্ধার বিকল্প নেই। তেমনটাই তো বলেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি যৌবন ধরে রাখতেও অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনস্বীকার্য। ত্বকের সমস্যাতেও দারুণ কাজ দেয় অশ্বগন্ধার ভেষজ গুণ। বিদেশেও এর চাহিদা ব্যাপক। সে কারণেই অশ্বগন্ধা চাষ অত্যন্ত লাভজনক।   


অশ্বগন্ধা কিভাবে খাবেন আপনারা


অশ্বগন্ধা হলো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভেষজ। এই অশ্বগন্ধা  বাজারে ট্যাবলেট এবং পাউডার  দুটোই পাওয়া যায়। অনেক সময় এর মূলটাও বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই অশ্বগন্ধা দিয়ে আয়ুর্বেদিকরা বিভিন্ন ঔষধ তৈরী করে থাকেন। এই ঔষধ নিয়ম মতো খেলে আমাদের দেহের অনেক উপকার সাধন হয়। 

অশ্বগন্ধার ট্যাবলেট প্রতিদিন রাতে একটা করে খেতে হবে। পাউডার খেতে হবে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে। দুধ হালকা কুসুম গরম রাখতে হবে এবং তাতে ৪ থেকে ৫ গ্রাম অশ্বগন্ধা পাউডার মিশিয়ে খেতে হবে। 

এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে আবার মিশ্রী মিশিয়েও খাওয়া যাবে। এছাড়াও অশ্বগন্ধার যে মূল রয়েছে সেটা পানিতে ভালভাবে ফুটিয়ে ছেঁকে  ঠান্ডা করে খেতে পারলে অশ্বগন্ধার উপকারিতা পুরোপুরি পাওয়া যাবে। নিয়মিত অশ্বগন্ধা গ্রহণ করা হলে অশ্বের মতো শক্তি এবং পুরুষালী অর্জন করা যায়। এখন জানা যাক অশ্বগন্ধার উপকারিতা কি কি।(অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নিন)

বাতের ব্যথা, অনিদ্রা থেকে বার্ধক্যজনিত সমস্যা। এ সবের নিরাময়ে অশ্বগন্ধার বিকল্প নেই। তেমনটাই তো বলেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি যৌবন ধরে রাখতেও অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনস্বীকার্য।

  • ত্বকের সমস্যাতেও দারুণ কাজ দেয় অশ্বগন্ধার ভেষজ গুণ। বিদেশেও এর চাহিদা ব্যাপক। সে কারণেই অশ্বগন্ধা চাষ অত্যন্ত লাভজনক।   
  • যাঁরা ভেষজ গাছের চাষ করতে চান, তাঁরা এ বর্ষায় অশ্বগন্ধার চাষ করতেই পারেন। কারণ, দিন দিন বাড়ছে ভেষজ গুণসমৃদ্ধ অশ্বগন্ধার চাহিদা। শুধু এ দেশেই নয়। বিদেশেও রমরমা বাজার অশ্বগন্ধার। 
  • বিদেশে চলে যাচ্ছে এই ভেষজ গাছ। বার্ধক্য নিরসন করে, অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, সবেতে কাজ করে। এ গাছের শিকড়েই সমস্ত ভেষজ গুণ। ত্বকের সমস্যা হোক বা আর্থ্রাইটিস। বার্ধক্যজনিত সমস্যা থেকে অনিদ্রা,এমনকি চেহারা ফেরাতেও অশ্বগন্ধার বিকল্প নেই।

এক বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে চোদ্দ হাজার অশ্বগন্ধার চারা লাগানো যেতে পারে। এর জন্য খরচও খুব একটা বেশি নয়। প্রতিটি চারার দাম তিনটাকা। আর বীজ থেকে চারা  তৈরি করতে চাইলে, তিনশো গ্রাম বীজেই এক বিঘায় অশ্বগন্ধা চাষ হয়ে যাবে। চারা লাগানোর আট মাস পর থেকেই পাওয়া যায় অশ্বগন্ধার ভেষজগুণ।

তবে অশ্বগন্ধা এক টানা বেশি দিন খাওয়া উচিত না। প্রথমে ১৫ দিন খেতে হবে তারপর ৩-৪ মাস খাওয়া যাবে না। ৩-৪ মাস পর আবার ১৫ দিন খাওয়া যাবে। যাদের ব্লাড সুগার রয়েছে অর্থাৎ রক্তে চিনির মাত্রা অনেক বেশি তাদের জন্য অশ্বগন্ধা বিশেষ কার্যকরি। অশ্বগন্ধার ঔষধ খাবার ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে দেয়। সাধারণ সর্দি কাশি সারতে অশ্বগন্ধা বিশেষ ভুমিকা পালন করে। (অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নিন)

আমাদের শরীর কে রোগ মুক্ত রাখতে অশ্বগন্ধা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনেক বেশি। এটা কোলেস্টেরল বৃদ্ধি কে রোধ করে রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং টি. জি.র. মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণে রাখে। যারা মানসিক চাপে ভুগছে এবং অত্যধিক চিন্তা করে তাদের জন্য অশ্বগন্ধা বেশ কার্যকরী উপাদান। এটা টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

কাশি সর্দি থেকে মুক্তিপেতে অশ্বগন্ধার মূল  অত্যান্ত কার্যকরী এবং  চোখের ব্যথা দুর করতে অশ্বগন্ধা বিশেষ উপকারী। অশ্বগন্ধার মূল  পুড়িয়ে ভালো ভাবে গুড়ো  করে আধা গ্রাম মাত্রায় একটু  মধুর সঙ্গে বেঁটে খেলে  ব্রংকাইটিসে উপকার হয়। অশ্বগন্ধা আমাদের দেহের ভেতর পেশির কোষে ইনসুলিন এর কার্যকারীতা বৃদ্ধি করে।  যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

1.অশ্বগন্ধা আপনার  হতাশা দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।  অশ্বগন্ধা মনোবল, সহনশীলতা, শক্তি এবং পেশি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি  মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ঘুমের সমস্যা দুর করে। শরীরে যে কোন ব্যথার জন্য কার্যকরি উপশম হচ্ছে অশ্বগন্ধা। এটি শক্তিশালী এ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটোরি এবং আর্থারাইটিক ও রিউম্যাটিক সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

2.অশ্বগন্ধা এমন একটি ভেষজ যা স্নায়ুতন্রের যত্ন নেয়, অশান্তি ও মানসিক চাপ কে দুর করে মনকে প্রফুল্ল রাখে। বর্তমানে অশ্বগন্ধা গাছের পাতা, শিকড়, বীজ এমনকি ফল বিভিন্ন ঔষধের সক্রিয় উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ের কাজে সাহায্য করছে। অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনেক বেশি হলেও যারা দীর্ঘদিন যাবৎ অন্যান্য ঔষধ সেবন করে আসছেন তাদের কে অশ্বগন্ধার ঔষধ খাবার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে। 




একমাত্র এই উদ্ভিদ থেকেই পুরুষদের জন্য শক্তিশালী কামোদ্দীপক ঔষধ তৈরি করা হয়। অশ্বগন্ধার শিকড় থেকে তৈরি টনিক দীর্ঘায়ু ও পুনরুজ্জীবন দান করে ফলে অকালে বার্ধক্য রোধ হয় এবং এটি বিভিন্ন রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।(অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নিন)

ফার্মাকোলজিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে এই ঐতিহাসিক গুল্মটি আর্থারাইরিস, হাঁপানি, ব্রংকাইটিস, আলসার, ক্যান্সার, দুর্বলতা, অনিদ্রা, ডায়াবেটিস, স্নাযুন্বৈকল্য, কোষ্ঠকাঠিন্য, বার্ধক্যজনিত স্মৃতি বিভ্রাট ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নানা ধরনের রোগ নিরাময়ের জন্য আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে ব্যবহার হয়ে আসছে এই অশ্বগন্ধা। জীবনী শক্তি, দৃঢ়তা, ধৈর্য, আয়ুবৃদ্ধি এবং পুরুষালী বৃদ্ধি করার কাজে এই ভেষজ ব্যবহার হয়ে  আসছে। তাই  আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে একে গুরুত্বপূর্ণ রসায়ন বলা হয়ে থাকে। যার প্রকৃত অর্থ হলো এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ যা শারীরিক এবং মানসিক উভয় বিচারেই শরীর কে সুস্থ রাখবে।