উপকারিতা এর দিক থেকে সজনে পাতার অনেক সুনাম রয়েছে আমাদের মাঝে। আমাদের মধ্যে অনেকে হয়তবা সজনে পাতার উপকারিতা জানার জন্য ব্রাউজ করছি। কিন্তু যথাযথ ভালো ফলাফল বা রেসাল্ট পাচ্ছিনা। আমরা অনেক জায়গা থেকে তথ্য বা ইনফরমেশন খোঁজার চেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছি, তাই না?
আজকে আপনাদের সামনে হাজির করব কিছু সজনে পাতার উপকারিতা। আপনাদের এই জানার আগ্রহ এর জন্য, আমরা চিন্তা করেছি সজনে পাতার এর বিষয় নিয়ে কিছু কথা লিখব।
আপনি যদি আমাদের এই ওয়েবসাইটে নতুন হয়ে থাকেন। তা হলে আমাদের এই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি আপনারা সজনে পাতার এর উপকারিতা বিষয় সম্পর্কে ভালো জানতে পারবেন।
সামান্য হাঁচি কাশি হলেই আমরা ডাক্তারের কাছে দৌড়ে যাই। অথচ আমাদের প্রকৃতিতেই এমন কিছু উপাদান আছে যা খেলে রোগ নিরাময় হয়। এমন একটি উপাদান হচ্ছে সাজিনা। আমাদের হাতের কাছে পাওয়া সাজিনা ও এর পাতার ধরণের গুণাগুণ রয়েছে, যার সবগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
শরীরে রক্তের পরিমান কমে গেলে পানি দিয়ে সজনেডাঁটা সেদ্ধ করে তার ক্বাথ এবং ডাঁটা চিবিয়ে খেলে রক্তল্পতা দূর হয়। তবে বেশ কিছুদিন নিয়মিত খাওয়া দরকার।
সজনে পাতার উপকারিতা |
সজনে পাতার সকল উপকারিতা জেনে নিন
- ব্ল্যাড প্রেসারঃ খাবার লবন অর্থাৎ ‘সোডিয়াম ক্লোরাইড’ ব্ল্যাড প্রেসার রোগীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অপরদিকে, ‘পটাশিয়াম লবন’ কোন ক্ষতি করেনা। সাজনে ডাঁটাতে সোডিয়াম ক্লোরাইড নেই বললেই চলে। কাজেই এতে ব্ল্যাড প্রেসার নিয়ন্ত্রিত থাকে।
- বসন্ত রোগ প্রতিরোধঃ সাজনে ডাঁটা এবং ফুল ভাজা বা তরকারী খেলে জল ও গুটি এ দু’ধরনের বসন্তে আক্রান্ত হবার কোন সম্ভাবনা থাকেনা।
- আয়ুর্বেদ মতে , সজিনার শিকড় কষায় ও উত্তেজক।
- মূলের ছাল নাশক, হজম বৃদ্ধিকারক এবং হৃদপিন্ড ও রক্ত চলাচলের শক্তিবর্ধক হিসাবে কাজ করে।
- মূলের ছালের জলীয় নির্যাস স্নায়ুবিদ দূর্বলতা, তলপেটের ব্যাথা ও হিস্টিরিয়া চিকিৎসার উপকারি।
- সাজিনার ফলের নির্যাস যকৃৎ ও প্লীহার অসুখে ধনুষ্টংকার ও প্যারালাইসিসে উপকারী।
- সাজিনার বিচির তেল বাত রোগের চিকিৎসায় মালিশ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
- সাজিনার মূলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্র প্রবৃত্তি হয়। এর রস হাপানি নিবারক ও মূত্রকারক।
- সজনে পাতার সাজিনার আঠা দুধে বেটে কপালে লাগালে মাথাধরা আরাম হয় এবং উপদংশজনিত বাগিতে প্রদান করা হয়।
- কৃমিনাশক হিসাবেও সাজনার ব্যবহার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মূল ও ছালের রস নিয়মিত / দিন খেলে শরীর কৃমি মুক্ত হয়ে যায়।
- এটি রক্ত সংবহণতন্ত্রের ক্ষমতাও বাড়ায়। সাজনার কচি পাতার রস নিয়মিত ব্যবধানে খেলে রক্তের উচ্চচাপ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে য়ায়। মায়ানমারের চিকিৎসকদের মতে, সাজিনার পাকা পাতার টাটকা রস দুবেলা আহারের ঠিক পূর্বে / চামচ করে খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে কমে যাবে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা এটি ব্যবহার করবেননা।
- সাজিনার শিকরের ক্বাথ ঘুৎড়িকাশি, হাঁপানি, গেটে বাত, কটি বেদনা ও সাধারণ বাত রোগে দুধের সাথে ব্যবহার হয়।
- সাজিনার পাতা বেটে রসুন, হরিদ্রা, লবন ও গোলমরিচ সহ খেলে কুকুরের বিষ্ট নষ্ট হয় এবং দুষ্টস্থানে প্রলেপ দিলে / দিনে ফুলা কমে যায় ও জ্বরে আরাম হয়।
- এর ছালের রস গুড়ের সাথে পান করলে শিরঃপীড়া আরাম হয়।
- গ্রাম পাতার রস গ্রাম সৈন্ধব লবনের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে বহূমুখে আরাম হয়।
See MOre: কাজু বাদামের উপকারিতা জেনে নিন
- সাজিনা পাতা রেধে খেলে ইনফ্লুয়েঞ্জার জ্বর ও যন্ত্রনাদায়ক সর্দিতে আরাম হয়।
- সাজিনার শেকর, লেবুর রস এবং জলফলের মিশ্রন পেটফাঁপা নিবারক ও উত্তেজক।
- এর ছালের রস গুড়ের সাথে পান করলে শিরঃপীড়া আরাম হয়।
- সজনে পাতার এর মূলের ছালের প্রলেদে দাদ কমে। তবে প্রতিদিন ব্যবহার করা উচিত নয়।
- শ্লেষ্মাঘটিত কারনে দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে পাতার ক্বাথ মুখে ধারন করলে ফুলা কমে যায়।
- অপুষ্টি হলো অন্ধত্বের অন্যতম কারন। অন্ধত্ব নিবারনে প্রচুর Indian royal commonwealth society for blind –এ ভিটামিন সমৃদ্ধ সজনে পাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
সজনে পাতার ছালের বড়ি অম্ল রোগে বিশেষ উপকারী। সজনে ছালের শাঁস, জঙ্গী হরিতকরি দানা ও যোয়ান আলাদা করে বেটে সমপরিমান একত্রে মিশিয়ে কুলের বিচির আকারে ছোট ছোট বড়ি তৈরী করে রোদে শুকাবেন। এগুলো বাটার সময় পানি না দিয়ে লেবুর রস দিবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে রাতে ঘুমের আগে গরম পানি দিয়ে একটি করে বড়ি খাবেন। এতে অম্ল রোগের উপকার পাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকলে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন।
সজনে পাতার আরো কিছু উপকারিতা
শরীরের কোন অঙ্গ মচকালে বা থেতলালে আদা ও সজনে ছাল বাটা প্রলেপ দিলে উপশম হয়।
হিক্কা হতে থাকলে / ফোটা করে সজনে পাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে / বার খাবেন।
সাজিনার ডাঁটা কৃমিনাশক ও জ্বরনাশক বলে দেশীয় ডাক্তাররা পক্ষাঘাত রোগে প্রয়োগ করেন। এর আঠা গর্ভস্রাবকারক।
ক্বাথ তৈরীরর নিয়মঃ গ্রাম সজনে ডাঁটার খোসা ছড়িয়ে মিলিলিটার পানিতে সেদ্ধ করতে হবে। পানি ফুটে এক কাপ পরিমান হলে, পাত্র আগুন থেকে নামিয়ে রাখা দরকার। সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলেই খাওয়া উচিত।
সজনে পাতা শুকিয়েও সংরক্ষন করা যায়, বহির্বিশ্বে সজনে পাতা শুকিয়ে সংরক্ষন করে থাকে । সজনের রয়েছে নানা উপকারী দিকঃ-
চোখের সমস্যাঃ- সজনে পাতা চোখের সমস্যা সমাধানে কাজ করে থাকে , এটিতে রয়েছে Eye side improve ink properties যা চোখের রেটিনা ভালো রাখতে সাহায্য করে।
হৃদ রোগেঃ- সজনে পাতা কোলেস্টরেল মাত্রা নিয়ন্ত্রন করে হৃদরোগে আক্রান্ত সম্ভাবনা কমিয়ে থাকে। নিয়মিত সজনে পাতা খেলে ব্লাডে অক্সিজেন লেবেল বেড়ে যায় এবং হার্ট ভালো রাখে।
হাঁপানিঃ- নিয়মিত সজনে পাতা খেলে হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তি মিলে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্বিতে ভালে কাজ করে থাকে।
ব্লাড প্রেশারঃ- সজনে পাতা খেলে মানুষের হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রন করে থাকে। যাদের হাই ব্লাড প্রেশার রয়েছে তারা প্রেশার নিয়ন্ত্রনে সজনে পাতা খেতে পারেন।
ডাইবেটিসঃ- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রেখে থাকে এই সজনে পাতা । ব্লাডে সুগারের পরিমান বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রনে ভালো কাজ করে থাকে। সজনে পাতা শুকিয়ে নিয়মিত খেলে ব্লাডে সুগারের পরিমান কমে যায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে থাকে।
কিডনিঃ- কিডনি সমস্য সমাধানে সজনে পাতা ও সজনে ডাটা ভালো কাজ করে থাকে।
এছাড়াও সজনের রয়েছে আরও অনেক গুনাগুন এটি লিভার ভালো রাখে, দাঁতের মাড়িকে মজবুত রাখতে সহায়তা করে ।
সজনের কিছু অপকারিতা
সজনের উপকারীতার সাথে সাথে কিছু অপকারিতাও রয়েছে যেমন এ গাছের পাতা, ফুল, ডাটায় উপকারীতা থাকলেও এই গাছের মূল বা শিকড় খাওয়া উচিত নয় । এতে বড় ধরনের সমস্য হতে পারে, প্যারালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। গর্ববতী মায়েদের জন্য এই সবজি এরিয়ে চলাটাই ভালে কেননা তাদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পরে। যে মায়েরা বাচ্চাদের দুধ খাওয়ায় তাহারা এ সবজিটি এড়িয়ে চলবেন কেননা এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ